» ১৩ বছর লড়াইয়ের পর শান্ত হলেন দুলবী

প্রকাশিত: ২৭. ডিসেম্বর. ২০২৩ | বুধবার

দরিদ্র পরিবারের মেয়ে দুলবী সন্তানের পিতৃপরিচয়ের লড়াইয়ে হার না মানা এক নারী
জগন্নাথপুর উপজেলার শ্রীরামসী নবীনগর এলাকার বাসিন্দা মোছা. দুলবী বেগম। কাবিন ছাড়া বিয়ের প্রলোভননে পড়ে সন্তান সম্ভবা হয়ে পড়েন।  দুলবী সন্তান জন্ম দেওয়ার পর স্ত্রীর অধিকার দিতে অস্বীকার করেন কথিত স্বামী প্রেমিক আব্দুর রশিদ শহিদ। দুলবীকে না জানিয়ে পালিয়ে যান যুক্তরাজ্যে, খোঁজ খবর রাখেননি দুলবীর। কয়েক বছর পর দেশে ফিরে অন্যত্র বিয়েও করেন তিনি। এর মধ্যে স্ত্রীর অধিকার দিতে ২০১১ সালে জগন্নাথপুর থানায় মামলা করেন দুলবী।

 

১৩ বছর আইনি লড়াই করে কথিত স্বামী প্রেমিককে হার মানিয়ে কারাগারে বিয়ে করলেন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের মোছা. দুলবী বেগম। হাইকোর্টের নির্দেশে মঙ্গলবার সুনামগঞ্জ কারাগারের জেল সুপারের কক্ষে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়। এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা হোসেনসহ কারা কর্তৃপক্ষ উপস্থিত ছিলেন।শহীদ তার উকিলের মাধ্যমে দুলবীকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান, আসামীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত বিয়ের আদেশ দেন।

 

দুলবী জানান, বাবা মারা যাবার পর মা সরলা বেগমসহ মামা বাবুল মিয়ার বাড়ি জগন্নাথপুরের শ্রীরামসী এলাকার নবীনগরে চলে আসেন তারা। ওখানেই গ্রামের ছাইম উল্লাহর ছেলে আব্দুর রশিদ শহিদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। পরে গোপনে কাবিন ছাড়া বিয়েও করেন তারা। এরপর দুলবী গর্ভবতী হলে দুই মাসের মাথায় শহিদ মিয়া ইংল্যান্ডে চলে যান। এরপর থেকে দুলবী বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি। দুলবী বেগম বলেন, ১৩ বছর পর সন্তানকে বাবার পরিচয় দিতে পেরে খুশি।
 

এই মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় আব্দুর রশিদ শহিদের। মঙ্গলবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আদেশে সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে দুলবী ও আব্দুর রশিদ শহিদের বিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন করা হয়। ছয় লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে পড়ান কাজী।

 

আব্দুর রশিদ শহিদের স্ত্রী সাজনা বেগমও বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা হোসেন, জেল সুপার শফিউল আলম, অতিরিক্ত জেলা সুপার হুমায়ুন কবিরসহ দুইপক্ষের কয়েকজন স্বজনও বিয়ের আনুষ্ঠানিকতায় উপস্থিত ছিলেন।

 

অতিরিক্ত জেল সুপার হুমায়ুন কবির বললেন, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আদেশে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।

 

[hupso]