» দলছুট শমসের মবিনকে বিয়ানীবাজার- গোলাপগঞ্জে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

প্রকাশিত: ১৬. অক্টোবর. ২০২৩ | সোমবার

বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি:বিএনপির দলছুট নেতা ‘তৃণমূল বিএনপি’র চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী নিজ এলাকায় হয়েছেন ‘অবাঞ্চিত’। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী ফয়সল আহমদ চৌধুরী ও তার দল সম্পর্কে ‘কটূক্তি’ করায় দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করে শমসেরকে গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারে ‘অবাঞ্চিত’ ঘোষণা করেছেন।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারের বিএনপি নেতাকর্মীরা শমসের মবিন চৌধুরীর কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। 

জানা যায়, সম্প্রতি ৭১ টিভিতে ‘এডিটর গিল্ডস’ নামক গোলটেবিল বৈঠকে শমসের মুবিন চৌধুরী গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের স্থানীয় বিএনপি এবং দলটির নেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরী সম্পর্কে নানা মন্তব্য করেন। তাঁর এরূপ বক্তব্যে ক্ষুব্ধ বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীরা সোমবার গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল এবং প্রতিবাদ সভা করেন।

সভায় বক্তারা বলেন- একসময় বিএনপিতে থাকা শমসের মবিন চৌধুরী দলের ক্রান্তিলগ্নে সরকারের দালালি করার উদ্দেশ্য নিয়ে রাজনীতি থেকে অবসর নেন এবং কিছুদিনের মধ্যেই তিনি বিকল্প ধারায় যোগদান করে গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারে সংসদ নির্বাচন করার খায়েস করেন। কিন্তু দলছুট বিশ্বাসঘাতক এমন ব্যক্তিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের মানুষ ঘৃনাভরে প্রত্যাখ্যান করলে তিনি মাত্র ৮১ ভোট পান এবং তার নমিনেশন বাজেয়াপ্ত হয়। এরপর তিনি দীর্ঘদিন ঘাপটি মেরে বসেছিলেন। বর্তমান সময়ে যখন দেশের গণতন্ত্রকামী সকল রাজনৈতিক দল একটি নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করছে- ঠিক তখন আন্দোলনের পিঠে ছুরিকাঘাত করার জন্য বিশ্বাসঘাতক শমসের মবিন সরকারের ক্রীড়নক হয়ে কথিত একটি কিংস পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়ে আবারো সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবার খায়েস নিয়ে নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ৭১ টিভিতে বিএনপি ও তার প্রার্থী সম্পর্কে চরম মিথ্যাচার করেছেন। 

গোলাপগঞ্জে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান উজ্জ্বলের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন- সহ-সভাপতি আশফাক আহমদ চৌধুরী, মাহবুবুর রহমান ফয়সল ও গোলাম কিবরিয়া, বিএনপি নেতা জলিল মেম্বার, শাহজাহান আহমদ, তানজিম আহমদ , কামাল আহমদ প্রমুখ।

অপরদিকে বিয়ানীবাজারে পৌরবিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন জুয়েলের সভাপতিত্বে ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিছবাহ উদ্দিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছরওয়ার হোসেন, পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান চেয়ারম্যান, বিএনপি নেতা আব্দুল মান্নান চেয়ারম্যান ও মো. মানিক মিয়া প্রমুখ। 

উল্লেখ্য, গত দুটি সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ (সিটি করপোরেশনভুক্ত এলাকা ও সদর উপজেলা) আসনে বিএনপির প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল শমসের মবিন চৌধুরীর। শেষ পর্যন্ত দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরকে এখানে বিএনপির প্রার্থী করা হয়। এ নিয়ে স্থানীয় বিএনপিতে দেখা দেয় মতবিরোধ। হতাশ হয়ে পড়েন শমসের মবিন চৌধুরী ও তাঁর অনুসারীরা।

২০১৫ সালে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিনি দল থেকে পদত্যাগ করেন। ২০১৮ সালের অক্টোবরে যোগ দেন বিকল্পধারায়। সেখান থেকে যান তৃণমূল বিএনপিতে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে তৃণমূল বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। সে কাউন্সিলে তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পান শমসের মবিন চৌধুরী।

কাউন্সিলের পর গত ১২ অক্টোবর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে ‘তৃণমূল বিএনপি’ ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা জানান দলটির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী।

[hupso]