- নতুন উপদেষ্টা নিয়োগের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের প্রতিবাদ
- মুনতাহার হত্যাকারীদের ৫ দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত
- সিলেটে সাংবাদিক তুরাব হত্যায় সাবেক ওসি মঈন গ্রেফতার
- মুনতাহার খুনিরা নারী, হয়ে উঠেছিলেন বর্বর নিষ্ঠুর ঘাতক!
- সিলেটে ছাত্র- জনতার আন্দোলনে নিহতদের পরিবারে সহায়তা প্রদান
- যে জাতি যত মেধাবী সে জাতি তত উন্নত ——সিকৃবি ভিসি ড. আলিমুল
- বাকৃবিতে সিকৃবি ভিসি ড. আলিমুল ইসলামের সংবর্ধনা
- সিলেট ক্যাম্পাসে অবরুদ্ধ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য
- আদানি গোষ্ঠীর বকেয়া পরিশোধ না করলে বিদ্যুৎ বিপর্যয় হবে ভয়াবহ
- শেখ পরিবারের বারোটিসহ মোট চৌদ্দটি হাসপাতালের নাম পরিবর্তন
» ইমরান ও তাঁর স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে কয়েক গুণ
প্রকাশিত: ০৬. ডিসেম্বর. ২০২৩ | বুধবার
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৪ আসনে ফের ইমরান আহমদকে মনোনয়ন দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। যাচাই-বাছাই শেষে গত রবিবার (৩ ডিসেম্বর) তাঁর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে মন্ত্রিত্ব লাভ করেন। সিলেট-৪ আসনের পাঁচবারের সংসদ সদস্য তিনি।
নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দেওয়া হফলনামায় দেখা গেছে, গত ১০ বছরে লাখপতি থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন মন্ত্রী ইমরান ও তাঁর স্ত্রী।
ইমরানের স্ত্রী অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমাদ ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপ-উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে বেগম বদরুন্নেসা ট্রাস্টের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন তিনি।
হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে- কেবল পাঁচ বছরের ব্যবধানেই ইমরান আহমদের আয়-সম্পদ বাড়ার পাশাপাশি স্ত্রীর অর্থকড়ি বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। গত দশ বছরে ৩ কোটি ২২ লাখ ২৭ হাজার ৩০২ টাকার অস্থাবর সম্পদের মালিক ইমরান আহমদ। এই সময়ে স্ত্রীর অবস্থাবর সম্পদ বেড়ে হয়েছে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৭৯ হাজার ৬৭৯ টাকা।
আর দশম সংসদ নির্বাচনে দেওয়া হলফনামার তথ্য অনুযায়ী ইমরান আহমদের বার্ষিক আয় ছিল ৫ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা। পাঁচ বছর পর সেই আয় বেড়ে দাঁড়ায় ২৯ লাখ ৫১ হাজার ৬২৩ টাকায় এবং এবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তার বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ২৫১ টাকা।
এবার হলফনামায় ইমরান আহমদ তার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছেন মোট ৩ কোটি ৭৫ লাখ ৬৪ হাজার ৬৮৪ টাকার। পাঁচ বছর আগে ছিল ৩ কোটি ২৩ লাখ ৬৯ হাজার ৮৫৭ টাকা এবং দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় অস্থাবর সম্পদ ছিল মাত্র ৫২ লাখ ৯২ হাজার ৩৮২ টাকা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এসে হলফনামায় স্ত্রীর নামে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ দেখান ৫ কোটি ৬৪ লাখ ৩৫ হাজার ১৯ টাকার। পাঁচ বছর আগে স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ ছিল ২ কোটি ৭৪ লাখ ৩৭ হাজার ৩৬৪ টাকার। ১০ বছর আগে (দশম সংসদ নির্বাচনে) হলফনামায় ইমরান আহমদের স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ ছিল ৭০ লাখ ৩০ হাজার ৩৩০ টাকার। গত দশ বছরে বিপুল সম্পদের চূড়ায় তারা। যেটি এবার অন্য কোনো প্রার্থীর নেই।
এবার স্ত্রীর নামে অস্থাবর সম্পদ বেড়ে হয়েছে ৩ কোটি ৮৬ লাখ ১০ হাজার ৯ টাকা। তন্মধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৮৩ হাজার ৯ টাকা, স্ত্রীর নামে ২টি গাড়ির মূল্য দেখিয়েছেন যথাক্রমে ১৬ লাখ ২২ হাজার ও ২৬ লাখ ১৫ হাজার টাকা, স্বর্ণ আছে ৫০ হাজার টাকার।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে স্ত্রীর নামে ১০৫ শতক কৃষি জমির মূল্য দেখিয়েছেন ৭৫ লাখ ১৮ হাজার ৫০৬ টাকা, অকৃষি ৫ কাটার মূল্য দেড় লাখ টাকা এবং ছয়তলা বাড়ির ২৫ শতাংশের মালিক তিনি, মূল্য দেখিয়েছেন এক কোটি ১ লাখ ৫৬ হাজার ৫০৪ টাকা।
আর ইমরান আহমদ নিজ নামে অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন ৩ কোটি ৭৫ লাখ ৬৪ হাজার ৬৮৪ টাকার। এছাড়া স্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে দাম উল্লেখ না করা ২৪ দশমিক ২৭ একর কৃষি ও ৫০ হাজার টাকা অর্জনকারী মূল্যে ৪ দশমিক ৫ কাটা অকৃষি জমি। স্থাবর সম্পদে নিজেকে চা বাগানের মালিক দেখিয়েছেন তিনি। হলফনামার তথ্যমতে, ইমরান আহমদের চেয়ে অস্থাবর সম্পদ ১০ লাখ ৪৫ হাজার ৩২৫ টাকা বেশি তার স্ত্রীর।
২০১৮ সালে নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামায় ইমরান আহমদের অস্থাবর সম্পদ ছিল ৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা এবং তার স্ত্রীর ছিল ২ কোটি ৭৪ লাখ ৩৭ হাজার ৩৬৪ টাকা।
২০১৮ সালে ইমরানের স্ত্রীর ১৬ লাখ ২২ হাজার টাকা মূল্যের একটি সুজুকি গাড়ি ছিল। এবার সেই গাড়ির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ২৬ লাখ ১৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি হার্ড জিপ। পাঁচ বছর আগে ড. নাসরিন আহমাদের কোনো কৃষিজমি ছিল না। এবারের হলফনামায় তার ৭৫ লাখ ১৮ হাজার ৫৬০ টাকা মূল্যের ১০৫ শতক কৃষিজমির উল্লেখ আছে।
এ ছাড়া বর্তমান হলফনামায় ড. নাসরিনের ৫০ হাজার টাকার স্বর্ণ, পাঁচ কাঠা অকৃষি জমি, ছয়তলা ভবনের ২৫ শতাংশ মালিকানার বিষয় উল্লেখ আছে, যা পাঁচ বছর আগেও ছিল।
এ পাঁচ বছরে সম্পদ কিছুটা বেড়েছে ইমরান আহমদেরও। ২০১৮ সালের হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, তার নামে ব্যাংকে জমা ছিল এক কোটি ৫৭ হাজার টাকা। এখন আছে এক কোটি ৫৭ লাখ টাকা। মন্ত্রী থাকাকালে তার বাৎসরিক আয় বেড়েছে ১৪ লাখ ৮৮ হাজার ৮২৮ টাকা, তবে পাঁচ বছরে তার স্থাবর সম্পত্তি অপরিবর্তিতই আছে।
এবার হলফনামায় ইমরান আহমদ ব্যবসা থেকে বছরে আয় দেখিয়েছেন ছয় লাখ ৬৩ হাজার ৩৮০ টাকা। শেয়ার-সঞ্চয়পত্রে আমানত তিন লাখ ৩১ হাজার ২০০ টাকা, চাকরি থেকে আয় ৩২ লাখ ৮৪ হাজার ১৯৬ টাকা এবং ব্যাংক সুদ থেকে প্রাপ্ত এক লাখ ৬১ হাজার ৪৭৫ টাকা।
অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ আছে ৩১ লাখ ৫৫ হাজার ১৯ টাকা। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমার পরিমাণ এক কোটি ৫৭ লাখ ৫৭ হাজার ৪০৭ টাকা, শেয়ারে বিনিয়োগ আছে ৯ লাখ ৬২ হাজার টাকা।
রয়েছে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া কৃষিজমি চার দশমিক ৪৭ একর এবং চার দশমিক পাঁচ একর অকৃষিজমি, রয়েছে চা ও রাবার বাগান এবং মৎস্য খামার।
আর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনী হলফনামায় ইমরান আহমদ তার স্ত্রীর নামে নগদ ৫৫ লাখ ৭০ হাজার ৩৩০ টাকা, একটি সুজুকি কার ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকা মূল্যের এবং স্বর্ণ দেখান ৫০ হাজার টাকার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে ছিল ৫ কাটা জমি দেড় লাখ টাকা মূল্যের এবং ৬তলা বাড়ির ২৫ শতাংশের মালিক মূল্যসহ এবারো হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।
[hupso]