» সিলেট-২ বিশ্বনাথ – ওসমানী নগরে লড়াইটা জমে উঠেছে।

প্রকাশিত: ৩০. ডিসেম্বর. ২০২৩ | শনিবার

আধ্যাতিক রাজধানীখ্যাত দুটি পাতা একটি কুড়ির দেশ পর্যটন আর প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট জেলায় রয়েছে ৬ টি সংসদীয় আসন । সিলেট সদর আসনের সবচে কাছের আসনটি হচ্ছে সিলেট – ২ সংসদীয় আসন। প্রবাসী অধ্যুষিত এই আসনটি এককালের তুখোড় ছাত্রনেতা বিএনপির ডাকসাইটে নেতা এম ইলিয়াস আলীর আসন বলে পরিচিত। দাপুটে এই নেতার নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে সংসদীয় আসনটির নির্বাচনী উৎসবটা জমেনি সেভাবে।

২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নিজদলীয় প্রার্থী ছিলনা অন্যদিকে বিএনপি ২০১৪:সালে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেনি ১৮ সালে অনুরূপ বিএনপি দলীয় কোনো ডাকসাইটে বা গুরুত্বপূর্ণ কেউ নির্বাচন করেনি ফলে গণফোরাম থেকে মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচন আসা

মোকাব্বির খানকে অপ্রকাশ্য সমর্থন ও ভোট দেয় বিএনপির ভোটাররা। নির্বাচনে ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ অনুসন্ধান এসব বিষয়টি মোকাব্বির খান তার বক্তব্য বিবৃতিতে প্রাধান্য দিয়ে মন কাড়েন বিএনপির কর্মী সমর্থক ভোটারদের, ফলে ২০১৮ সালে একতরফাখ্যাত নির্বাচনে নির্বিঘ্নে নির্বাচনী বৈতরণি পার হয়ে যান মোকাব্বির খান। ২০১৪ সালের নজীর বিহীন নির্বাচন সারা দুনিয়ায় প্রশ্নবিদ্ধ হয় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩ জন নির্বাচিত হয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০ ১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি দেশী বিদেশি চাপে পড়ে নির্বাচনে এলেও ভোটের দিন ভোট কারচুপি কেন্দ্র দখল আগের রাতে ভোট কাস্টিংয়ের অভিযোগ এনে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে তারা ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায়। এরপরও সারা দেশে বিপুল জনপ্রিয়তা থাকা সত্বেও মাত্র ৭ টি আসন পায় দলটি। সেই বিতর্কিত আলোচিত সমালোচিত নির্বাচনে সিলেটের হেভিওয়েট আসনখ্যাত

সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত হন মোঃ মোকাব্বির খান।যদিও সমালোকরা বলছিলেন ভোটে নয় শরীকদের খুশি করতেই আওয়ামীলীগের উপহার। এই আসনটিতে ২০০৮ সালে বিএনপির ডাকসাইটে নেতা এম ইলিয়াস আলীকে পরাজিত করে আওয়ামীলীগের বর্তমান সিলেট জেলা সভাপতি সফিকুর রহমান চৌধুরী নির্বাচিত হন। গত দুই টার্ম আর তাকে নমিনেশন দেয়নি আওয়ামীলীগ । জাতীয় পার্টি গণফোরাম আসন ভাগাভাগির ফলে এই আসনটি শরীকদের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয় দুইবারই । এবার কৌশলগত কারণে আসনটি ছাড় হয়নি। শরীক ও ডামি সব দলের প্রার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। এবার সরকার বা আওয়ামীলীগ নিজদলীয় প্রার্থী জেলা আওয়ামিলীগ সভাপতি সফিকুর রহমান চৌধুরীকে নমিনেশন দিয়েছে । সিলেটের সর্বত্রই নির্বাচনের কোথায়ও কোনো আলোচনা নেই আমেজও নেই একমাত্র আওয়ামীলীগের প্রার্থী ছাড়া অন্যকোনো প্রার্থীর লিফলেট পোস্টার গণসংযোগ নির্বাচনি তৎপরতা চোখে পড়ছেনা।

তবে সিলেট -২ আসনে এবার একটু ভিন্নতা পাওয়া যাবে বলে ভোটাররা মনে করছেন। এই আসনে নিরানন্দ ভাব কেটেছে বর্তমান বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানের নির্বাচনে অংগ্রহণের যুক্ত হওয়ায়। বর্তমান পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের নমিনেশন নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রথম দফায় দ্বিতীয় দফায় বাতিল হয়ে যাওয়ায় আওয়ামী শিবিরে স্বস্তি ফিরে আসে। নাছোরবান্দা মুহিবুর রহমান স্বপদে বহাল থেকে নির্বাচন করার আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর থাকায় তিনি হাইকোর্টে রিট করেন সেই রিটে মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক বর্তমান মেয়র পদে থেকেই নির্বাচন করার আদেশপ্রাপ্ত হলে আবারো বিভিন্ন শিবিরে হতাশা নেমে আসে। নির্বাচনি কলা কৌশলে বাজিমাত করার সম্ভবনা মুহিবের রয়েছে বলে ভোটাররা মনে করেন। এম ইলিয়াস আলীর সঙ্গে রাজনৈতিক ময়দানে লড়াকু মুহিবকে সহজভাবে নিচ্ছেন না কেউই। মুহিবুর রহমান ভোটের ময়দানে ফিরে আসায় সিলেট – ২ সংসদীয় আসনে নির্বাচনের সহজ সমিকরণটি পাল্টে যায়। মুহিবুর রহমানের রয়েছে নিজস্ব ভোট ব্যাংক এবং ব্যক্তি ইমেজ তরুণদের কাছে রয়েছে গ্রহণ যোগ্যতা তিনি বিএনপির ভোটারদের প্রতি বেশি মনোযোগী।

সব প্রার্থীই জানেন বিশ্বনাথ – ওসমানীনগরে নির্বাচনে ইলিয়াস আলীর নাম অনেক বড় ফ্যাক্টর। আওয়ামীলীগ প্রার্থী ব্যতীত অন্যসব প্রার্থীরা বক্তব্য বিবৃতিতে ইলিয়াস আলী নিখোঁজ প্রসঙ্গটি তোলে বিএনপির ভোটারদের সহানুভূতি কুড়াতে মরিয়া যদিও সেখানকার বিএনপি দলীয় ভোটাররা নির্বাচন বয়কট করেছেন ভোট কেন্দ্রে নিজেরা যাবেন না এবং সাধারণ ভোটারদের ভোটে নিরুৎসাহিত করছেন। প্রবীণ ভোটার হুসমত আলী বিশ্বনাথ পৌর এলাকার ভোটার তিনি বলেন খুব কম ভোটার ভোট কেন্দ্রে যাবেন তারপর ও এখানে ত্রিমুখী ভোটের শক্ত লড়াই হবে। নৌকা প্রতীকে
আওয়ামীলীগ প্রার্থী সফিকুর রহমান চৌধুরী, বর্তমান মেয়র মুহিবুর রহমান, জাতীয় পার্টির প্রার্থী এহিয়া চৌধুরী ও গণফোরাম প্রার্থী বর্তমান সাংসদ মোকাব্বীর খান মুল আলোচনায় থাকলেও মূলত লড়াই হবে সফিকুর রহমান চৌধুরী ও মুহিবুর রহমানের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে লড়বেন মোকাব্বীর খান অভিমত বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের।

[hupso]