» সিলেটে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ফিতরা নির্ধারণ

প্রকাশিত: ২০. মার্চ. ২০২৪ | বুধবার

প্রতিবারের ন্যায় এবারও সিলেট নগরী ও পাশ্ববর্তী এলাকার জন্য বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট মহানগর শাখার “দারিদ্র বিমোচনে যাকাত-ফিৎরার ভূমিকা ও স্থানীয় ভাবে ফিতরার পরিমাণ নির্ধারণ” শীর্ষক সেমিনারে স্থানীয়ভাবে ফিৎরার পরিমাণ নির্ধারণ করেছে।

বুধবার (২০ মার্চ) বাদ যোহর সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নগর ভবনের ৬ষ্ঠ তলাস্থ হলরুমে অনুষ্ঠিত সেমিনরে সর্বনিম্ন ফিৎরা ১০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৬১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং যাকাতদাতাদের সুবিধার্থে বাজার মনিটরিং করে যাকাতের সর্বনিম্ন পরিমাণ (রূপা মূল্য) ১ লক্ষ ১০ হাজার ২৫০ টাকার উপর হিসেব করে যাকাত দিতে হবে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতখার আহমদ চৌধুরী।

প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি সিলেটের উপ পরিচালক ও বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির মহাসচিব শাহ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম।

মহানগর সভাপতি মাওলানা হাবীব আহমদ শিহাবের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- দরগাহে হযরত শাহজালাল রহ: মাদরাসার মুহাদ্দিস আতাউল হক জালালাবাদী, প্রধান মুফতি আবু খয়ের বিথঙ্গলী, সিলেট কেন্দ্রীয় জামে মসাজিদের খতিব মাওলানা মোস্তাক আহমদ খান, সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতি মাওলানা আব্দুল মুছাব্বির, ইমাম সমিতি সিলেট জেলা সভাপতি মাওলানা এহসান উদ্দিন, নয়াসড়ক মাদরাসার মুফতি জুবায়ের আহমদ, শায়খুল হাদীস মাওলানা আশরাফ আলী মিয়াজানী, কুদরত উল্লাহ হাফিজিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মিফতাহ উদ্দিন, আলেমে দ্বীন গাজী রহমত উল্লাহ, সিলেট বারের সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট মুফতি আব্দুর রহমান, জমিয়ত নেতা মাওলানা খলিলুর রহমান, মুফতী আব্দুর রহমান শাহজাহান।

শাখা সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মাসুম আহমদ এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে বক্তরা বলেন, যাকাত ইসলামের মৌলিক বিধান। এ বিধানকে লংঘন করা মারাত্মক অপরাধ। দেশের অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে যাকাতের ভূমিকা অপরিসীম। অনেক দেশ যাকাতভিত্তিক ইসলামী অর্থনীতির মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে বিশ্বের শীর্ষে অবস্থান করছে। বাংলাদেশের মত ক্ষুদ্র দেশে প্রতি বছর সঠিক ভাবে যাকাত উত্তোলন করলে বছরে ৮৬ হাজার কোটি টাকা যাকাত উত্তোলন হবে। যা দেশের মূল বাজেটের বৃহৎ একটি অংশ। যাকাতের সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অল্প দিনেই দেশকে দারিদ্র থেকে মুক্ত করা সম্ভব। বক্তাগণ আরো বলেন, নামাজ এবং যাকাত ইসলামী সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম। বাংলাদেশে সরকার কর্তৃক নামাজের কোন প্রাতিষ্ঠানিক রূপরেখা না থাকলেও সামাজিক বা মহল্লা কেন্দ্রিক মসজিদ পরিচালনা সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে। তেমনি ভাবে নামাজের মত যাকাতকেও মহাল্লা/ এলাকা/ ইউনিয়ন কেন্দ্রিক যাকাত ফান্ডে যাকাত উত্তোলন করে তা সঠিক ভাবে বিতরণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে পারলে সমাজ থেকে বেকারত্ব দূর হবে। পাশাপাশি কর্মসংস্থান তৈরি হবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট মহানগর শাখা এ বারের সেমিনারে সিলেটের মুফতীয়ানে কেরাম, উলামা মাশায়েখ, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের ও ইমাম-খতিবগণের সাথে আলোচনা ক্রমে ও সিলেট নগরীর বিভিন্ন খুচরাবাজার যাচাই করে ৬০ টাকা হিসাবে আটা ১৬৫০ গ্রামের মূল্য ১০০ টাকা ও খেজুর (মধ্যম) ৩০০ টাকা দরে ৩৩০০ (এক সা’) গ্রামের মূল্য ১০০০ টাকা, কিসমিস ৬০০ টাকা হিসাবে ১,৯৮০ টাকা ও পনির ৯০০ টাকা বাজার দরে ২,৯৭০ টাকা এবং মেডজুল এ গ্রেড খেজুর ১৭০০ টাকা হিসাবে ৫৬১০ টাকা নির্ধারণ করে ফিৎরার ঘোষণা করা হয়।

আগামী শুক্রবার জুম্মার বয়ানে যাকাত-ফিৎরা বিষয়ে আলোচনা করার জন্য সিলেটের সকল ইমাম খতিবদের প্রতি আহবান জানান।

সেমিনারে অন্যন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আব্দুস শহিদ, মাওলানা আহমদ হোসাইন, মাওলানা নূর আহমদ কাসেমী, মাওলানা শাহ আলম, মাওলানা আব্দুস সালাম, মাওলানা এখলাছুর রহমান, মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান, মাওলানা ছুহাইব আহমদ, মাওলানা রফিকুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুস সামাদ, মুফতি জসিম উদ্দিন, মাওলানা আব্দুল্লাহ শাহজাহান, মাওলানা শরীফ উদ্দিন, মাওলানা মুফতি মিজানুর রহমান, মাওলানা মঈন উদ্দিন হোসাইন, মাওলানা আব্দুর রহমান, মুফতি ইলিয়াস আহমদ, বিপ্লবী মুজিবুর রহমান, মাওলানা রায়হান উদ্দিন, মাওলানা আবিদ হাসান, মাওলানা মাহফুজ আহমদ, মাওলানা আতাউর রহমান, মুফতি আব্দুর রহিম মাহির, মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ সহ নগরীর ৪২ ওয়ার্ডের দায়িত্বশীলগণ।

[hupso]