» শাবিপ্রবিতে কোটা বিরোধী বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ০৩. জুলাই. ২০২৪ | বুধবার

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থার পুনর্বহালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে এ কর্মসূচ
বিক্ষোভ মিছিলটি ইউনিভার্সিটি সেন্টার ভবনের সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় গোলচত্বরে এসে শেষ হয়। এরপর দুপুর সোয়া ১২টা থেকে গোলচত্বরে ২০ মিনিট অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

‘সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এসময় শিক্ষার্থীরা চাকরিতে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন।

বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘সাড়া বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে; গর্জে উঠুক আরেকবার একাত্তরের হাতিয়ার; কোটা না মেধা? মেধা, মেধা; অ্যাকশন অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন, কোটা প্রথার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন; আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই; ‘১৮ এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার; কোটা প্রথা যেখানে, লড়াই হবে সেখানে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

অবস্থান কর্মসূচিতে রসায়ন বিভাগের ২০১৮-২০১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আসাদুল্লা আল গালিবের সঞ্চলনায় বক্তব্য দেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের একই সেশনের শিক্ষার্থী সজীব হোসেন ও সমাজকর্ম বিভাগের ২০২১-২০২২ সেশনের শিক্ষার্থী আজাদ শিকদার।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ বলেন, ১৯৭১সালে বৈষম্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আমরা যে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি। সেই দেশে এই বৈষম্যমূলক কোটা অযোক্তিক। যেখানে স্বাধীন দেশে মুক্তিযুদ্ধােদের লাঞ্চিত করা হয়, সেখানে মুক্তিযুদ্ধের তৃতীয় প্রজন্মকে কোটার সুবিধা দেওয়া বৈষম্যমূলক। আমাদের দাবি ২০১৮ সালের পরিপত্র পূণর্বহাল করে সরকারি চাকরিতে ৩০শতাংশ কোটা বাতিল করা হোক। মেধার ভিত্তিতে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দিতে হবে।’

কোটা ব্যবস্থাকে প্রহসন উল্লেখ করে সমাজকর্ম বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী আজাদ শিকদার বলেন, ২০১৮ সালে সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা চাকরিতে অন্যায্য ও অযোক্তিক কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। তার প্রেক্ষিতে ঐ বছরের ৪ অক্টোবর ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে কোটা বাতিল করে মেধাভিত্তিক কোটা চালু করা হয়। কিন্তু অত্যন্ত হতাশার বিষয় চাকরিতে কোটা পূণর্বহাল করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে প্রহসন মনে করি। আমরা শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সারা দেশের শিক্ষার্থীদের চলমান কোটা বিরোধী আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করছি। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলমান থাকবে।’

সিলেটের মুঁরারিচাদ কলেজ (এমসি কলেজ) থেকে সহপাঠীদেরকে নিয়ে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেন ওই কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী তানজিনা বেগম। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকেই দেশে মেধার কম মূল্যায়ন হয়েছে। এই কোটাব্যবস্থা কোনোভাবেই আমাদের সাথে যায় না। ২০২৪ সালে এসে নারীকোটা, মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করা সময়ের দাবি। শুধু পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের জন্য এই কোটা রাখা যেতে পারে।’

গত ৫ই জুন মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল সংক্রান্ত পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় হাইকোর্ট৷ এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচার হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন৷ এর ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৯ম থেকে ১৩ তম গ্রেডে নিয়োগ দেওয়ায় আর কোনো বাধা থাকল না।

[hupso]