» সিলেট মেয়রের অনুপস্থিতি বিঘ্নিত হচ্ছে নাগরিক সেবা

প্রকাশিত: ১১. আগস্ট. ২০২৪ | রবিবার

অভিভাবকহীন শহর স্থবির হয়ে গেছে নাগরিক সেবা সমূহ। গত ৫ আগষ্ট ছাত্র আন্দোলনে মুখে দেশ থেকে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ। এর পর থেকে সারা দেশে আওয়ামীলীগের এমপি মন্ত্রী নেতাকর্মীরা পড়েন ছাত্র জনতা ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের তোপের মুখে। তখন যে যেদিকে পারছেন আত্ম রক্ষায় পালিয়ে গেছেন বাসা বাড়ী ছেড়ে। প্রতিরোধ করা তো দূরে থাক, জেলা ও মহানগরের আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মী কারো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না , কেউ দেশ ছেড়েছেন কেউবা পালিয়েছেন শহর ছেড়ে গ্রামে। এই সুযোগে দুর্বৃত্তরা এমপি মন্ত্রী নেতাকর্মীদের বাসাবাড়ী ভাঙচুর অগ্নি সংযেগ করেছে। রেহাই পায়নি মাস সাতেক আগে দায়িত্ব ভার গ্রহণ করা জননন্দিত মেয়র মোঃ আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাস ভবনটি। দুর্বৃত্তরা তার বাসায় ঢুকে মূল্যবান আসবাবপত্র কাচের দরজা- জানালা ভেঙে চুরমার করে মুল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। এবং বাসায় আগুন ধরিয়ে দেয়, আগুনে বাহির অংশে বেশ ক্ষতি হয়। দুর্বৃত্তদের আক্রমণের সময় মেয়র বাসায় ছিলেন না। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান মেয়রের বাসায় হামলা করার সময় বিএনপি অঙ্গ সংগঠনের পরিচিত কোনো মুখ সেখানে ছিলনা তবে তারা মরহুম প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামে শ্লোগান দিতে দিতে বাসায় হামলা চালায়। এরপর থেকে বাসায় আর ফিরে আসেননি মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। বিভিন্ন সূত্র জানায় তিনি সিলেট শহরেই রয়েছেন । পরিস্থিতি শান্ত হলে বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুরোদমে কার্যক্রম শুরু করলে নগরবাসীর সেবায় সিটি করপোরেশনে ফিরবেন বলে জানা গেছে । এদিকে আন্দোলনের সময় রোষানলে পড়ে সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন যানবাহন ও ভবন। ময়লা সংগ্রহে ব্যবহৃত বেশ কয়টি ট্রাক জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, যার ফলে শহর জুড়ে পরিচ্ছন্নতা কাজে ব্যাঘাত ঘটে। জায়গায় জায়গায় জমা হয় ময়লার স্তুপ। বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে শহর জুড়ে।
ফুটপাত ফিরে আসে তার পুরনো রূপে। হকারদের দখলে চলে যায় ফুটপাত। নগরীর বিভিন্ন সড়কে দেখা গেছে, ফুটপাতের পাশাপাশি মূল সড়কের অর্ধেকেরও বেশি দখল করে পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসছেন হকারেরা। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। ফুটপাত ছেড়ে রাস্তার উপর দিয়ে হাটতে হচ্ছে তাদের। হকারদের কারণে নগরে যানজটও বেড়েছে আগের তুলনায় অনেকটা। সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার আহমদ চৌধুরী বলেন বর্তমানে সার্বিক পরিস্থিতিতে একটু সমস্যা হচ্ছে তবে সেগুলো দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে। আমাদের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়মিত অফিস করছেন। রোববার থেকে আমাদের মোবাইল কোর্ট নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করবে। তখন থেকে হকাররা আর সড়কে বসতে পারবেন না। তারা তাদের জয়গায় ফিরে যেতে হবে।

নির্বাচিত হওয়ার পর মেয়র আনোয়ারুজ্জামান সিলেটকে ক্লিন ও স্মার্ট সিটি গড়ে তুলতে হকার পুনর্বাসনের ঘোষনা দেন। এ নিয়ে  দীর্ঘ পরীক্ষা নীরিক্ষা পর্যালোচনার পর লালদিঘীপাড় মাঠকে ব্যবহারের উপযোগী করে তুলে সেখানেই  সিলেট নগরের হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেন তিনি । কিন্তু যাবতীয় সুযোগ সুবিধা করে দেওয়ার পর ও হকাররা সুযোগ পেলে মুল রাস্থায় চলে আসে। এদিকে মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর অনুপস্থিতি সিলেটের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন । ঢিলে ঢালা হয়ে পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক সেবা সমূহ
।অনেকের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায় যে মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় হামলায় অনেকেই বিরূপ সমালোচনা করেছেন। তারা মনে করেন এই নগরীতে তিনি নতুন।লন্ডনে তিনি শাসক দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র হিসাবে কয়েকমাস আগে দায়িত্ব নিয়েছেন মাত্র দলীয় কার্যক্রমে তিনি খুব বেশি জড়াবার সুযোগ পাননি এর মধ্যে ৫ আগস্ট ওলট পালট হয়ে গেছে শাসক দলের অস্তিত্ব। তবে নাগরিকরা আশা করছেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারো নগর ভবনে ফিরবেন সিলেট সিটি করপোরেশনের নন্দিত মেয়র একটি গ্রীণ ক্লিন স্মার্ট নগরীর গড়ার স্বপ্নদ্রষ্টা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী । সিলেটকে গ্রীণ ক্লিন স্মার্ট সিটি করে গড়ে তুলতে দলমত নির্বিশেষে সকলের সহযোগীতা চেয়ে আসছেন সেই শুরু থেকেই।

[hupso]