» গাজায় খাবার ও পানি, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল

প্রকাশিত: ০৯. অক্টোবর. ২০২৩ | সোমবার

গাজায় ব্যাপক বোমাবর্ষণ, খাবার ও পানি বন্ধ করছে ইসরায়েল

তিন লাখ সংরক্ষিত সেনাকে বাহিনীতে যুক্ত করেছে ইসরায়েল। প্রায় ৬০০ ফিলিস্তিনি ও ৯০০ ইসরায়েলি নিহত।

নির্বিচার বোমা হামলার পর এবার ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। উপত্যকাটিতে খাবার, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হচ্ছে। এতে বোমার আঘাতে বিধ্বস্ত গাজায় ভয়ানক মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে।

ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার জবাবে শনিবার থেকে গাজায় বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। এরই মধ্যে গতকাল সোমবার উপত্যকাটি সম্পূর্ণভাবে অবরুদ্ধ করার ঘোষণা দেওয়া হলো। গাজায় স্থল অভিযানের জন্য সেনা সমাবেশও ঘটানো হয়েছে। এ লক্ষ্যে তিন লাখ সংরক্ষিত সেনাকে বাহিনীতে যুক্ত করেছে ইসরায়েল।

গাজা সম্পূর্ণ অবরোধ করার অর্থ হচ্ছে, গাজা উপত্যকায় জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় কোনো কিছুই ঢুকতে দেবে না ইসরায়েল। গতকাল দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওয়াভ গ্যালান্ট বলেছেন, ‘আমি গাজা উপত্যকা সম্পূর্ণ অবরোধের নির্দেশ দিয়েছি। বিদ্যুৎ, খাবার, গ্যাসসহ সবকিছুই সেখানে বন্ধ থাকবে।’ শনিবার থেকেই গাজায় বিদ্যুৎ ও পানির সরবরাহ বন্ধ করা শুরু হয়েছে।ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী গাজা উপত্যকার সীমান্তের বড় অংশ ইসরায়েলের সঙ্গে, বাকিটা মিসরের সঙ্গে। গাজার আকাশপথ ও সৈকত ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে। সেখান দিয়ে কারা যেতে পারবে এবং কী পণ্য ঢুকতে পারবে, সে বিষয়ে বিধিনিষেধ রয়েছে ইসরায়েলের। ফলে ইসরায়েল চাইলেই গাজা ঘিরে অবরোধ জারি করতে পারে।

শনিবার ইসরায়েলে হামাসের রকেট হামলার পর থেকেই একটি জল্পনা ছিল, গাজায় নজিরবিহীন স্থল অভিযানও শুরু করবে ইসরায়েল। এ নিয়ে ইসরায়েল বাহিনীর প্রধান মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হ্যাগারি বলেন, দুই দিনে তিন লাখ সংরক্ষিত সেনাকে বাহিনীতে যুক্ত করা হয়েছে। এর আগে এত সংখ্যক সংরক্ষিত সেনা একত্র করা হয়নি। ইসরায়েল স্থল হামলা শুরু করবে।
স্থল হামলার আগাম সতর্কতা হিসেবে ইসরায়েলের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ফিলিস্তিনিদের মুঠোফোনে কল করছেন এবং অডিও বার্তা পাঠাচ্ছেন। বিশেষ করে গাজার উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের ফিলিস্তিনিদের কাছে এ বার্তা পাঠিয়ে বলা হচ্ছে, ইসরায়েল বাহিনী সেখানে হামলা শুরু করতে পারে। এদিকে ইসরায়েলকে সহায়তার জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় রণতরি ইউএসএস জেরার্ল্ড ফোর্ডসহ যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ ওই অঞ্চলের দিকে যাত্রা করেছে।বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, ইসরায়েলের বিমান হামলায় ধ্বংস হওয়া ভবনগুলোতে জীবিতদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। হামলার পর গাড়িতে লাগা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন জরুরি সেবা দলের সদস্যরা। গাজা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত (গতকাল রাত সাড়ে ১২টা) প্রায় ৬০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত ব্যক্তিদের সংখ্যা আরও বেশি। গতকালও ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে রকেট হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হামাসের রকেটের আঘাতে এবং ইসরায়েলে ঢুকে পড়া গোষ্ঠীটির যোদ্ধাদের হামলায় অন্তত ৯০০ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

[hupso]