- সিলেট- সুনামগঞ্জ সীমান্তে ৩ কেটি টাকার চোরাই পণ্য জব্দ
- শাপলা বিল থেকে ফেরার পথে তামাবিল সড়কে প্রাণ হারালো তিন তরুণ
- সিলেট আদালত পাড়ায় পুলিশের মাঝখানে নূুরুকে পেটালেন তারা
- সিলেট-১ সংসদীয় আসনে প্রার্থী নিশ্চিত করলো বিএনপি
- বিজয় দিবসে নুপুর বেতার শ্রোতা ক্লাবের পুষ্পার্ঘ্য অর্পন
- সিলেটে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবস উদযাপন
- আজ সিলেট মুক্ত দিবস
- যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস পালিত
- মিছবাহ উদ্দিন সিরাজের উপর দুর্বৃত্তদের হামলা
- সিলেটে মশকনিধন ও খাল পরিষ্কারের ব্যাপক কর্মসূচি শুরু করেছে সিটি করপোরেশন
» এই মুহুর্ত থেকে বন্ধ হলো তিন দিনের প্যাকেজ,
প্রকাশিত: ১৪. অক্টোবর. ২০২৩ | শনিবার
মুঠোফোনে তিন দিনের ইন্টারনেট প্যাকেজ রোববার (১৫ অক্টোবর) থেকে থাকছে না। অর্থাৎ শনিবার মধ্যরাত থেকে তিন দিনের প্যাকেজ কিনতে পারবেন না গ্রাহকেরা। এখন থেকে মানুষকে অন্তত সাত দিন মেয়াদি প্যাকেজ কিনতে হবে।
সাত দিনের প্যাকেজের দাম তিন দিন মেয়াদি প্যাকেজের চেয়ে বেশি। ফলে মানুষের ব্যয় বাড়বে বলে জানিয়েছে অপারেটরগুলো।
যেমন মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের ওয়েবসাইটে শনিবার রাতে দেখা যায়, তিন দিন মেয়াদের এক গিগাবিট (জিবি) ডেটার প্যাকেজের দাম ৪৬ টাকা। রোববার থেকে আর তিন দিনের প্যাকেজ কেনা যাবে না। সাত দিন মেয়াদে তিন জিবি ডেটা কিনতে ব্যয় হবে ১২৯ টাকা।
মোবাইল অপারেটরগুলো বলছে, তিন দিনের প্যাকেজ বন্ধ হওয়ায় ইন্টারনেট ব্যবহারে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে অনীহা তৈরি হতে পারে। কারণ, একসঙ্গে ইন্টারনেটের পেছনে বেশ বড় অঙ্কের ব্যয় (স্বল্প আয়ের মানুষের পরিপ্রেক্ষিতে) করার সামর্থ্য যাঁদের নেই, তাঁদের একাংশ ডেটা কেনা বাদ দেবেন।
যাঁদের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট একেবারেই জরুরি, তাঁরা বাড়তি ব্যয় করে ইন্টারনেট ব্যবহার করবেন। প্রয়োজন না থাকলেও অনেক মানুষকে বেশি মেয়াদের বেশি দামি প্যাকেজ কিনতে হবে।
অপারেটরদের হিসাবে, মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ৬৯ শতাংশের বেশি ৩ দিনের প্যাকেজ ব্যবহার করেন। দেশে মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী প্রায় ১২ কোটি। উল্লেখ্য, কেউ সর্বশেষ ৯০ দিনে একবার ইন্টারনেট ব্যবহার করলেই তাঁকে একজন গ্রাহক ধরা হয়।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ৮ অক্টোবর এক মতবিনিময় সভায় মোবাইল অপারেটরদের পক্ষ থেকে বলা হয়, এখন সাধারণ মানুষ নিত্যপণ্যের দামের চাপে রয়েছেন। খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ১২ শতাংশ ছাড়িয়েছে। তাই আপাতত তিন দিনের প্যাকেজ বন্ধ করা সমীচীন হবে না।
মোবাইল অপারেটরেরা এ ক্ষেত্রে শ্যাম্পুর মিনিপ্যাকের উদাহরণ সামনে এনেছে। তারা বলছে, ছোট ছোট প্যাকেটে শ্যাম্পু বিক্রি হয় বলেই স্বল্প আয়ের মানুষ তা কিনতে পারেন।
নতুন নির্দেশনা কার্যকর করার প্রসঙ্গে মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটবের মহাসচিব লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ জুলফিকার প্রথম আলোকে বলেন, তিন দিনের প্যাকেজ না থাকায় গ্রাহকদের অতিরিক্ত দামে ৭ দিনের প্যাকেজ কিনতে হবে। আর্থিক কারণে যাঁরা কম মেয়াদের প্যাকেজ ব্যবহার করেন, তাঁদের ওপর বেশি প্রভাব পড়বে। তিনি বলেন, সরকার ও অপারেটর-উভয়েরই আর্থিকভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইন্টারনেট গ্রাহকও কমে যেতে পারে।
বন্ধের পক্ষে যুক্তি
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ইন্টারনেট প্যাকেজ সম্পর্কিত নতুন নির্দেশিকায় শুধু ৭ ও ৩০ দিন মেয়াদি প্যাকেজ রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে থাকতে পারবে অনির্দিষ্ট মেয়াদের (আনলিমিটেড) প্যাকেজ। মোট ৪০টি প্যাকেজ দিতে পারবে অপারেটররা।
এত দিন ৩, ৭, ১৫, ৩০ ও অনির্দিষ্ট মেয়াদের প্যাকেজ ছিল। অপারেটরগুলো মোট ৯৫টি প্যাকেজ দিতে পারত।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বিটিআরসির যুক্তি হলো, বেশিসংখ্যক প্যাকেজের কারণে গ্রাহকেরা বিভ্রান্ত হন। অল্প মেয়াদের প্যাকেজের কারণে অসচেতন গ্রাহকেরা ক্ষতিগ্রস্তও হন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিটিআরসি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বলেন, মেয়াদের চক্র ও প্যাকেজের চক্রের উদ্দেশ্য হচ্ছে অতিরিক্ত মুনাফা করা। লাভ কমে যাচ্ছে বলেই অপারেটররা তিন দিনের মেয়াদ চাচ্ছে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মেয়াদ, অসংখ্য প্যাকেজে গ্রাহক বিভ্রান্ত হয়েছেন। নতুন নির্দেশিকা গ্রহণযোগ্য।
ওই অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিটিআরসি গত ২৫ মে থেকে ১২ জুন অনলাইনে একটি জরিপ পরিচালনা করে। সেখানে ১ হাজার ৬৭৫ গ্রাহক অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৫৫ শতাংশ গ্রাহক মেয়াদ ৭ ও ৩০ দিন এবং অসীম করার পক্ষে ছিলেন।
অবশ্য অপারেটরগুলোর কর্মকর্তাদের দাবি, ৪৫ শতাংশ গ্রাহক তিন দিনের প্যাকেজ থাকার পক্ষে ছিলেন। তাদের প্রয়োজনটি উপেক্ষা করা হয়েছে। জরিপটি নিয়েও তারা কিছু আপত্তি করেছে।
মধ্যরাত থেকে কার্যকর
তিন দিনের প্যাকেজ বন্ধ এবং নতুন নির্দেশনার বিষয়টি অপারেটররা গ্রাহকদের খুদে বার্তা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্দেশনা দিয়ে জানিয়েছে।
গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক বলেছে, বিটিআরসির নির্দেশনা অনুযায়ী ১৫ অক্টোবর থেকে ইন্টারনেট ও ‘কম্বো’ অফার শুধু ৭ দিন, ৩০ দিন ও আনলিমিটেড (অনির্দিষ্ট) মেয়াদের হবে। তবে ১৫ অক্টোবরের আগে কেউ ৩ ও ১৫ দিনের প্যাকেজ কিনে থাকলে তা মেয়াদ থাকা পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে।
বিটিআরসির সঙ্গে কয়েক দফায় বৈঠকও করেছে অপারেটরগুলো। অ্যামটব জানিয়েছে, বিটিআরসি নতুন ডেটা প্যাকেজ নীতি চালু হওয়ার পর গ্রাহকদের ওপর কেমন প্রভাব পড়ে তা পর্যালোচনা করার আশ্বাস দিয়েছে।
মুঠোফোনে ৩০ দিন মেয়াদি প্যাকেজ কেনেন রকিব হাসান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বাসায় ও অফিসে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তিনি। কোথাও গেলে প্রয়োজনে মুঠোফোনে স্বল্পমেয়াদি প্যাকেজ কেনেন। এখন বেশি টাকা দিয়ে বেশি মেয়াদি প্যাকেজ কিনতে হবে তাঁকে।গ্রাহকরা বলছেন যাঁরা অ্যাপ ব্যবহার করে ইন্টারনেট ও ভয়েস প্যাকেজ কেনেন, তাঁরা সচেতন গ্রাহক। তাদের জন্য যেকোনো মেয়াদের প্যাকেজ থাকতে পারে। সবার জন্য সীমা বেঁধে দেওয়ার দরকার নেই।
[hupso]