» সিলেটের বাস টার্মিনালের নামকরণ করা হলো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে

প্রকাশিত: ২৬. অক্টোবর. ২০২৩ | বৃহস্পতিবার

দক্ষিণ এশিয়ার নান্দনিক বাস টার্মিনাল গুলোর মধ্যে একটি সিলেটের স্থানীয় ইতিহাস ঐতিহ্যের নান্দনিক রপায়নে নির্মিত বাস টার্মিনাল
সিলেটের কৃতিসন্তান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের এমপি ড. এ কে আব্দুল মোমেনের নামে টার্মিনালের নামকরণ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর) সিলেট সিটি করপোরেশনের বাজেট ঘোষণা অনুষ্ঠানে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন- ‘আপনারা দেখেছেন, আমার মেয়াদকালে সিলেট মহানগরীতে কয়েকটি চত্বর নির্মাণ করা হয়েছে। সম্প্রতি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পরিষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে কয়েকটি স্থাপনা এবং চত্বরের নামকরণ করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার কর্তৃক জারিকৃত সিটি কর্পোরেশনের সড়ক, ভবন ও স্থাপনা নামকরণ নীতিমালা ২০১৪-অনুযায়ী নামকরণ প্রস্তাব যাচাই-বাছাই কমিটির সুপারিশ এবং একই বিষয়ে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক গঠিত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী দক্ষিণ সুরমায় অবস্থিত সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সিলেট-১ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের নামে নামকরণের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।’

ব‍ৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় দক্ষিণ সুরমার চন্ডিপুল এলাকায় কুশিয়ারা কনভেনশন হলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সিসিকের ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের ৯২৫  কোটি ৪ লক্ষ  ৪৯ হাজার টাকার এ বাজেট ঘোষণা করেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।  

প্রণয়নকৃত বাজেটে আয় ও ব্যয় সমপরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে।

সিসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুল আলিম শাহ’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশন জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মুফতি মাওলানা জসিম উদ্দিন, গীতা পাঠ করেন সিসিকের সহকারি কর কর্মকর্তা জ্যুাতিস চক্রবর্তী, ত্রিপিটক পাঠ করেন সিলেট বৌদ্ধ বিহারের উপাধ্যক্ষ মহানাম ভিক্ষু এবং বাইবেল পাঠ করেন সিলেট প্রেসবিটারিয়ান চার্চের রেভারেন্ড ফিলিপ সমদ্দার। 

অনুষ্ঠানে গণমাধ্যম কর্মী বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিগণ, সিলেটের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিগণ ও নাগরিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।  

উল্লেখ্য, নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীতে দক্ষিণ সুরমার কদমতলীতে  ৮ একর ভূমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল। এটি এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে নান্দনিক বাস টার্মিনাল বলছেন সংশ্লিষ্টরা। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন না হলেও চলতি বছরের গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে। ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাস টার্মিনালটিতে বিমানন্দরের আদলে বহির্গমন ও আগমনের আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে গোলাকার পাঁচতলা একটি টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে, যেখানে টার্মিনাল পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কার্যালয়, কন্ট্রোল রুম, পুলিশ কক্ষ এবং পর্যটন কার্যালয় স্থাপন করা হবে।

যাত্রী উঠানামার জন্য পৃথক টার্মিনাল ভবন, সুপরিসর পার্কিং ব্যবস্থা, পরিবহন সেবাদানকারীদের জন্য যাবতীয় সুবিধা সম্বলিত পৃথক ভবন, রেস্টুরেন্ট ও ফুড কোর্ট, পর্যাপ্ত যাত্রী বিশ্রামাগার, নারী, পুরুষ ও শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য আলাদা আলাদা শৌচাগার, ব্রেস্ট ফিডিং জোন, স্মোকিং জোন, ছোট দোকান, অসুস্থ যাত্রীদের জন্য সিক বেড, প্রার্থণা কক্ষসহ সব ধরনের আধুনিক সেবা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে এই স্থাপনায়।

এছাড়া পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সভা অনুষ্ঠানের জন্য বিশাল হলরুম এবং যানবাহনের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ওয়ার্কশপ স্থাপন করা হয়েছে।

সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কিনব্রিজ, আলী আমজাদের ঘড়ি ও আসাম টাইপ বাংলোর স্থাপত্যশৈলী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে কদমতলী বাস টার্মিনাল প্রকল্পের নকশা প্রণয়ন করা হয়। এই টার্মিনালের নকশা করেন স্থপতি সুব্রত দাশ, স্থপতি রবিন দে ও স্থপতি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।

[hupso]