» হরতালে অচল সিলেট বন্ধ দূরপাল্লার বাসসহ আঞ্চলিক পরিবহন।

প্রকাশিত: ২৯. অক্টোবর. ২০২৩ | রবিবার

সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আজ রবিবার (২৯ অক্টোবর) সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা পালন করছে বিএনপি ও জামায়াত। সকাল থেকে সিলেটে  ঢিলেঢালা হরতাল থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে। সকাল ৮টার পর থেকে বিভিন্ন স্থানে অতর্কিত পিকেটিং করছেন বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সঙ্গে আছে জামায়াতও। তারা ভাঙচুর করছেন যানবাহন। পুলিশের দিকে ছুঁড়ছেন ইট-পাটকেল। তবে পুলিশও তাদের ঠেকাতে কঠোরভাবে রয়েছে মাঠে। যে স্থানেই বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন সেখানেই উপস্থিত হয়ে টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দিচ্ছে তাদের। 

স্থানে স্থানে পিকেটিংয়ের কারণে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক যানশূণ্য হয়ে পড়েছে। নিরাপত্তার অজুহাতে পরিবহন শ্রমিকরাও সকাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন। সিলেট থেকে ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লার বাস। আঞ্চলিক সড়কগুলোতেও চলছে না গণপরিহন। এতে জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া লোকজন পড়েছেন বিপাকে। অনেকেই পায়ে হেঁটে যাচ্ছেন তাদের গন্তব্যে।

সকাল ১০টার দিকে সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়- সেখানে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে বাসগুলো। এসময় পরিবহন শ্রমিকরা বলেন- যাত্রী নেই। রাস্তায় বেরোলে গাড়ি ভাঙচুরে আশঙ্কা রয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে গাড়ি বন্ধ রেখেছি আমরা। আশা করি- বিকাল নাগাদ গাড়ি চলাচল শুরু হবে।

এদিকে, ব্যক্তিগত গাড়িও সিলেটে রাস্তায় খুব কম বের হয়েছে আজ।

সিলেট নগরীর মিরারবাজার এলাকায় পিকেটিং করেছে ছাত্রদল নেতা কর্মীরা। রোববার সকাল ১১টায় মিরাবাজার পয়েন্টে পিকেটিং করে ছাত্রদল নেতা কর্মীরা। ছাত্রদল নেতা কর্মীরা মিছিল দিয়ে পিকেটিং করে। মিছিল করায় মিরাবাজার এলাকার সকল দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।
 

এসময় হরতাল সমর্থনকারী ছাত্রদল নেতা কর্মীরা হরতাল উপেক্ষা করে ২টি লেগুনা গাড়ি চলায় ইটপাটকেল ছুঁড়ে গাড়ি ভাঙচুর করেন।

আওয়ামী লীগ নেতার মালিকানাধীন যাত্রীবাহী একটি বাসও ভাঙচুর করেছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। হরতাল উপেক্ষা করে বাসটি যাত্রী নিয়ে দক্ষিণ সুরমা টার্মিনাল থেকে জাফলংয়ের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে হুমায়ূন রশিদ চত্বরে পিকেটিংয়ের শিকার হয়।

এসময় হরতাল সমর্থনকারী নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল ছুঁড়ে গাড়িটি ভাঙচুর করেন বলে জানিয়েছেন জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া মাহমুদ।

তিনি জানান, তার মালিকানাধীন বাস ‘আল মাহমুদ পরিবহন’ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জাফলং যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। হুমায়ূন রশিদ চত্বরে আসার পর বিএনপির নেতাকর্মীরা গাড়িটি ভাঙচুর করেন। পরে বাসটি সোবহানীঘাটস্থ পেট্রোলপাম্পের সামনে এনে রাখা হয়।

সকাল ১০টার দিকে  মহানগরের দরগাহ গেইট এলাকায়
কয়েকজন সাংবাদিকের মোটরসাইকেলেও ভাঙচুর চালায় তারা। 

সিলেটের প্রায় সব এলাকায় অতর্কিত ‘পিকেটিং’ করছেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। রবিবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে রাস্তায় নেমেছেন তারা। 

সকাল ৯টার দিকে মহানগরের লন্ডনি রোডের হাজীপাড়ার মুখ থেকে ৩০-৩৫ টি মোটরসাইকেলে করে বিএনপি নেতাকর্মীরা বের হয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে গিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ ১০-১২টি গাড়িতে ভাঙচুর চালান। তাদের অনেকের হাতে ছিলো লাঠি। 
১৫-২০ মিনিট ভাঙচুর চালিয়ে তারা চলে যান। 

নাশকতারোধে সড়কে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীও রয়েছে সতর্কাবস্থায়। নগরীর জিন্দাবাজারে পুলিশের সাথে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

হরতালের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) কমিশনার মো. ইলিয়াস শরীফ বিপিএম (বার) পিপিএমসি বলেন- সিলেটের জনগণের সার্বিক নিরাপত্তায় আমরা মাঠে রয়েছি। হরতালকে কেন্দ্র করে কেউ নাশকতার চেষ্টা করলে আমরা কঠোরভাবে তা দমন করবো। আজ ভোর থেকে আমাদের মোবাইল টিম, সিআরটি ও সাদা পোশাকে একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে পুলিশের সাজোয়া যান পিসিআর।

সিলেটজুড়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)ও। বিভিন্ন সড়কে টহল দিচ্ছে তারা। 

[hupso]