» ৪৭ বিদেশী চিকিৎসককে জরিমানায় ক্ষুব্ধ ড.মোমেন

প্রকাশিত: ০১. মার্চ. ২০২৪ | শুক্রবার

ইউরোপ থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন ৪৭ চিকিৎসক। বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়েও তাঁরা জরিমানার শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। 

 

গতকাল এক বিবৃতিতে ক্ষোভ জানিয়ে আবদুল মোমেন বলেন, ইউরোপের তাফিদা রকিব ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশের প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যাসোসিয়েশন ও আরটিএম বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত চিকিৎসাসেবাবিষয়ক যে কো-অপারেশনের ব্যবস্থা করল, বিএমডিসি তাদের উৎসাহ না দিয়ে বরং জরিমানা করেছে। বিষয়টি অস্বাভাবিক। 

 

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ৪৭ বিদেশি চিকিৎসকের একটি টিমকে ব্রিটিশ প্রাইভেট ফাউন্ডেশন (তাফিদা রকিব ফাউন্ডেশন) বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে। তারা বিনা পয়সায় উন্নত চিকিৎসা শেখাবেন এবং গরিবদের বিনা পয়সায় চিকিৎসা দেবেন। বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিয়ম অনুযায়ী কোনো বিদেশি ডাক্তার বাংলাদেশে চিকিৎসা দিতে পারবেন না। তবে আমাদের বিশেষ অনুরোধে এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় তাঁরা এক শর্তে রাজি হন। শর্ত হচ্ছে-স্পন্সর এজেন্সিকে প্রতিজন ডাক্তার বাবদ ১৩ হাজার টাকা ও ভ্যাট দিতে হবে।

তিনি বলেন, তাফিদা হলো একজন ব্রিটিশ বাংলাদেশি নয় বছরের মেয়ের নাম। মেয়েটির বয়স যখন চার বছর, অজানা অসুখের কারণে বহু মাস অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে ছিল। মা-বাবা মেয়েটির হাসপাতাল খরচ বহন করতে না পারায় ব্রিটিশ সরকার তার মেশিন ও ভেন্টিলেটর ডিসকানেক্ট করবে বলে ঘোষণা দেয়। এ নিয়ে সারা ইউরোপে তোলপাড় শুরু হয়। তখন ইতালি সরকার শিশুটির দায়িত্ব নেয়। তাফিদা বর্তমানে সম্পূর্ণ সুস্থ ও ভালো হয়ে উঠেছে। 

 

যখন ব্রিটিশ সরকার টাকার কারণে মেয়েটির ভেন্টিলেটর খুলে দিতে চেয়েছিল তখন বহু লোক মেয়েটির জন্য টাকা তোলে। ওই চ্যারিটির টাকায় তাফিদা রকিব ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়। বাংলাদেশে এ ৪৭ জন বিশেষজ্ঞ মেডিকেল ডাক্তারকে আনা-নেওয়া বাবদ প্লেনের টিকিট ভাড়া এমিরেটস এয়ারলাইনস বিনা পয়সায় দিয়েছে। স্থানীয় হোটেল এদের থাকা-খাওয়া বাবদ খরচ ডিসকাউন্ট দিচ্ছে। তবে বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) একমাত্র ব্যতিক্রম।

 

এ বিদেশি ডাক্তারদের দেশের কোনো হাসপাতালে বিনা পয়সায় রোগী দেখা বা সেবা করা বা প্রদর্শনী শিক্ষা অপারেশন করাও নিষিদ্ধ। তবে কয়েক বছর আগে রোকেয়া ও রাবেয়া নামে দুটি সিয়ামিজ শিশুর চিকিৎসা হাঙ্গেরি সরকার আমাদের সামরিক (সিএমএইচ) হাসপাতালের সহযোগিতায় করে ও সার্থক হয়। সর্বমোট ১৩৯ জন (বাংলাদেশি ও বিদেশি) ডাক্তার ও সহযোগীরা এতে কাজ করেন। বিএমডিসির কাছ থেকে তখন কোনো অনুমোদন নিতে হয়নি। কোনো চার্জ বা জরিমানা দিতে হয়েছে বলে শুনিনি।

 

তাফিদা রকিব ফাউন্ডেশনের পরিচালক আহমদ আল কবীর বলেন, ‘বিনামূল্যে সেবা দিতে গিয়ে ডাক্তারদের জরিমানা করা এটা খুবই দুঃখজনক।’

 

তিনি বলেন, ‘৫০ ডাক্তারকে নয়; ৪৭ জনকে জরিমানা করা হয়েছে।’  সবমিলিয়ে ওই ডাক্তারদেরকে ৬ লাখ ১১ হাজারেরও অধিক টাকা জরিমানা দিতে হবে। 

 

বর্তমানে হাঙ্গেরি ও বাংলাদেশের মধ্যে খুবই ঘনিষ্ঠ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সক্রিয় উদ্যোগে রোকেয়া রাবেয়ার কাহিনি উভয় দেশে বহুল আলোচিত।
 

[hupso]