» নিজের ঘরে বিদ্যুৎ নেই অথচ সেই বিদ্যুতেই ধ্বংস হয়ে গেলো গোটা পরিবার

প্রকাশিত: ২৭. মার্চ. ২০২৪ | বুধবার

নিজের ঘরে বিদ্যুৎ লাগানোর সামর্থ্য ছিল না অভাবের কারণে ঘরে বিদ্যুৎ নিতে পারেননিব ফয়জুর রহমান অথচ সেই বিদ্যুতের তার ছিড়ে পড়ে প্রাণ গেল তার পরিবারের ৬ জনের। একমাত্র মেয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছিল হাসপাতালে অবশেষে সেও মারা গেছে আজ।

 
মঙ্গলবার ( ২৬ মার্চ) ভোর রাতে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব গোয়ালবাড়ী গ্রামের ভাঙ্গার পাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- ফয়জুর রহমান (৫০), তার স্ত্রী শিরি বেগম (৪৫), তাদের মেয়ে সামিয়া (১৫), সাবিনা (৯) এবং ছেলে সায়েম উদ্দিন (৭)।

 আহত হয়েছে তাদের আরেক মেয়ে সোনিয়া আক্তার (১২)। তাকে উদ্ধার করে সিলেটের এম এ জি ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।

 ফয়জুর রহমান ছিলেন বাকপ্রতিবন্ধী; তিনি দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন বলে প্রতিবেশীরা জানান। এই বাড়িটি পাঁচ-ছয় বছর আগে তৈরি করা। বাড়িটি টিনের দোচালা। ঘরের ভেতর ছোট ছোট দুটি কক্ষ। 

 স্থানীয়রা জানান, সেখানে লেপ-তোষক পুড়ে আছে। এই ঘরের উপর দিয়েই গেছে পল্লী বিদ্যুতের তার। ছিঁড়ে যাওয়া তারটি তখনও টিনের চাল আর মাটিতে পড়ে ছিল। ছোট্ট বারান্দার এককোণে স্তুপ করে লাকড়ি রাখা। তার মাঝেই আনা হয়েছে পাঁচটি খাটিয়া। তার পাশেই স্বজন ও প্রতিবেশীরা করছেন আহাজারি। 
তারা জানান, নিজের কোনো জায়গা ছিল না দরিদ্র ফয়জুর রহমানের; তিনি অন্যের জমিতে ঘর তুলে পরিবার নিয়ে বাসবাস করতেন।  বিদ্যুৎ নেওয়ার মতো সামর্থ ছিল না তার, ফলে সোলার প্যানেলের আলোতে অন্ধকার কাটাতেন।

 খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তারা। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) এ বি এম মিজানুর রহমান গণমাধ্যমে বলেন, রাতে জেলার বিভিন্ন জায়গায় ঝড়বৃষ্টি হয়। এ কারণে রাত আড়াইটার দিকে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করা হয়। ভোর ৫টার দিকে আবার চালু করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এর পরে কোনো একসময় বজ্রপাতে পাশের একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির ইনসুলেটর ক্র্যাক হয়ে যায় এবং এ সময় আগুন ধরে গিয়ে তার ছিঁড়ে ঘরের চালে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।”

 

বিদ্যুতের তারের নিচে ঘর না বানানোর নির্দেশ রয়েছে। ঘটনাটি তদন্তে এরই মধ্যে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

 

 

[hupso]