» সিলেটে কোটা আন্দোলন ভাঙ্গনের অপচেষ্টা : সতর্ক আন্দোলনকারীরা

প্রকাশিত: ১৬. জুলাই. ২০২৪ | মঙ্গলবার

চলমান কোটা আন্দোলনকে ‘সরকারবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে নিজের দায়িত্ব ছেড়েছেন আন্দোলনের  সিলেট অঞ্চলের সহ-সমন্বয়ক নূর মো.বায়েজীদ। তিনি  সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) গণিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। সোমবার (১৫ জুলাই) তিনি কোনো আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেননি।

শাবিছাত্র নূর মো. বায়েজিদ এই আন্দোলনের প্রথম থেকে সক্রিয় ভূমিকায় থাকলেও রবিবার (১৪ জুলাই) থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে সমন্বয়কের পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন।

জানা গেছে, বায়েজিদ তার পদ থেকে অব্যাহতি নেয়ার আগে কোটা আন্দোলনকারীদের একটি ভার্চ্যুয়াল গ্রুপে দুঃখ প্রকাশ করে তার মতামত প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে মেধার মূল্য না কোনো দিন ছিল, না আছে, থাকবে কি না সেটাও জানি না। এই দেশ সারাজীবন টাকা-ক্ষমতা আর পা-চাটাদের হাতেই বন্ধি ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। আমি এই বিশ্বাস নিয়ে আন্দোলনে এসেছিলাম যে, সকল প্রকার দলমতের ঊর্ধ্বে গিয়ে বাংলাদেশের সকল সাধারণ ছাত্রসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে ন্যায়ের পক্ষে। কিন্তু, ইদানিং আমার সমন্বয়ক কমিটির কিছু বন্ধুসহ, শাবিপ্রবিতে আমার আন্দোলনের সাথে থাকা অনেক সহকর্মীদের কথাবার্তায় আমার কাছে মনে হচ্ছে- তারা এই আন্দোলনে এসেও তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা বজায় রেখে সরকারবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হতে যাচ্ছে। যা, এই আন্দোলনের মূল মোটিভকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাই, আমি সজ্ঞানে, চিন্তাভাবনার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম যে, আমি আর এই আন্দোলনের সাথে নেই। ১৯৫২ সালের ভাষাশহীদ এবং ১৯৭১সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ এবং গাজী হওয়া সকলকে স্মরণ করার মাধ্যমে আমি এই আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ালাম।’
এই ঘোষণার পর সোমবার তিনি শিক্ষার্থীদের কোনো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেননি।
বায়েজিদের এই সরে যাওয়াতে আন্দোলনে কোনো প্রভাব পড়বেনা বলে অনেক ছাত্র জানিয়েছেন। তারা বলছে বায়েজিদ ভয় পেয়েছেন । আন্দোলনে সক্রিয় একাধিক ছাত্রছাত্রী জানিয়েছেন এটা একটা পলিসি যে আমি ছিলাম / কিন্তু আন্দোলনের লক্ষ্য সহি নয় বলে চলে গেলাম মূলত একটি ভুল বার্তা পাঠিয়ে আন্দোলনরত দুর্বলমনাদের সরাবার অপচেষ্টা করতেই সরে গেছে।

আজ মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবেন। তারা আজ বিকাল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও সভা করবেন।

এর আগে সোমবার দুপুরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে আসাদুল্লাহ আল গালিব ও সুইটি আক্তার বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী বরাবর স্মারকলিপি জমা দেন । এতে বলা হয়, ‘শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের আজীবন বহিষ্কার করাসহ যথাযথ শাস্তির আওতায় আনতে হবে। রবিবার দিবাগত রাতে কোটা সংস্কারের দাবিতে মিছিলে অংশ নেওয়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ।’

 অপরদিকে, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের যৌক্তিকতার প্রতি  সিলেট ছাত্রলীগ প্রথমে সংহতি প্রকাশ করলেও আন্দোলনের নামে ‘বাড়াবাড়ি’ না করে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। শিক্ষার্থীদের বর্তমান কর্মকাণ্ডকে বিতর্কিত আখ্যা দিয়ে মহানগর ও শাবি ছাত্রলীগ ৪ দিন ধরে আন্দোলনবিরোধী নানা কর্মসূচি পালন করছে। সোমবার রাতেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা  সিলেট মহানগরে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল ও মোটরসাইকেল শোডাউন দিয়েছে।

 

[hupso]