» পতিত স্বৈরাচারের দোসর দুর্নীতিবাজ জামালের একমাত্র গুন দুর্নীতি

প্রকাশিত: ১৭. আগস্ট. ২০২৪ | শনিবার

গত ১৬ আগস্ট শুক্রবার ছুটির দিনে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলাতক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. জামাল উদ্দিন ভূঞা অগ্যাত অবস্থান থেকে অফিস আদেশ জারির হিন চেষ্টার প্রতিবাদে শনিবার (১৭ আগস্ট) সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র শিক্ষক , কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
এ সময় তারা বলেন অনিয়ম , দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বরপুত্র ডা. জামাল ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে পতিত স্বৈরাচারের পতনের পর ছাত্র – জনতার রোষানল থেকে প্রান ভিক্ষা চেয়ে ও পদত্যাগের আশ্বাস দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যান ।
পরে তিনি ৬ – ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ডিন কাউন্সিলের আহবায়ককে দায়িত্ব দিয়ে ছুটির দরখাস্ত পাঠান।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের দাবির প্রেক্ষিতে ১৪ আগস্ট ডিন কাউন্সিলের আহবায়ক প্রফেসর ড. মো. ছিদ্দিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতিতে ডিন কাউন্সিলের সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সকল প্রকার রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদ থেকে শিক্ষক কর্মকর্তারা পদত্যাগ করায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিদ্যমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সাপেক্ষে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করা হবে।

এই সকল সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে ১৬ সেপ্টেম্বর অগ্যাত স্থান থেকে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে রুজুকৃত প্রফেসর ড. মো. ইউনুসের বিচারকার্য স্থগিতের দাবির প্রতিবাদ জানিয়ে স্মারক লিপিতে স্বাক্ষরকৃত সিকৃবির দুর্নীতিবাজ ভিসি প্রফেসর ডা. জামাল উদ্দিন ভূঞা ১৮ আগস্ট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম যথারীতি চলবে মর্মে অফিস আদেশ জারীর প্রেক্ষিতে ক্যাম্পাস সংশ্লিষ্ট ছাত্র, শিক্ষক , কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। যার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ অস্থিতিশীল করার পায়তারা করছেন বলে উল্লেখ করছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংশ্লিষ্টরা।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়
আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ অফিস আদেশ প্রত্যাখ্যান করি।

কেননা দেশের এমন জরুরী পরিস্থিতিতে শুক্রবার ছুটির দিনে একজন পলাতক ও অবাঞ্ছিত উপাচার্য (যার অসীম দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে) কর্তৃক স্বাক্ষরিত (নীল রংয়ের কলম দ্বারা স্বাক্ষরিত, যা দাপ্তরিক নথি হিসেবে অগ্রহণযোগ্য) যে কোন বিজ্ঞপ্তি বাতিল ও অগ্রহণযোগ্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, অফিস আদেশটির অস্তিত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে নেই। এছাড়া অফিস আদেশ থেকে এ বিষয়টি স্পষ্টত যে, উপাচার্য হিসেবে যে স্বাক্ষর রয়েছে তা সরাসরি স্কাক্ষরিত নয় বরং তা স্ক্যানকৃত স্বাক্ষর বসানো রয়েছে এবং নীল রংয়ের কলম দ্বারা স্বাক্ষরিত, যা দাপ্তরিক নথি হিসেবে অগ্রহণযোগ্য। সুতরাং পলাতক ও অবাঞ্ছিত উপাচার্য কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোন স্বার্থান্বেষী মহল অজ্ঞাত স্থান থেকে এ ধরণের বিব্রতকর অফিস আদেশ প্রকাশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যৌক্তিক দাবি আদায়ে বাঁধা প্রদান করতে চাচ্ছে, যা কোন ভাবে কাম্য নয়।
আপনারা অবগত আছেন যে, গত ৬ আগস্ট, ২০২৪ থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জামাল উদ্দিন ভূঞার পদত্যাগ দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা পদত্যাগে স্মারকলিপি প্রদান, অবাঞ্ছিত ঘোষণা, অবস্থান কর্মসূচি, বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। তবে এ নির্লজ্জ ও দুর্নীতি পরায়ণ উপাচার্যর কোন পদত্যাগের খবর মিলেনি। এমনকি গত ৬ আগস্টের পর থেকে পলাতক রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অসীম দুর্নীতি ও অনিয়মের সাথে যুক্ত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে কতিপয় শিক্ষক ও নামধারী ছাত্রলীগ ক্যাডার বাহিনীকে ব্যবহার করে টিকে থাকার চেষ্টায় থাকা স্বৈরাচারের দোসর এ উপাচার্য।
আপনাদের জ্ঞাতার্থে, ইতিমধ্যে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ও প্রক্টর, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর প্রভোস্ট ও সহকারী প্রভোস্টসহ বিভিন্ন প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গ পদত্যাগ করেছেন। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হলগুলো অরক্ষিত। ভূয়া চিঠিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের আন্দোলনের দাবী দাওয়ার কথা উল্লেখ না করে ছাত্রলীগ পরিচালিত সাধারণ ছাত্রদের কথা বলা হচ্ছে।

আমরা বলতে পারি, অপরাধী গোষ্ঠীর হাতে অরক্ষিত হচ্ছে দিনদিন এ বিশ্ববিদ্যালয়। এমতবস্থায় উপাচার্য পদত্যাগ করে নতুন উপাচার্য নিয়োগ, প্রশাসনে নতুন পদায়নসহ সিন্ডিকেট সভা না ডেকে ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা অসম্ভব। সুতরাং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে দ্রত পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এছাড়া যারা ভুয়া ও মিথ্যা বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়ে বিভ্রান্তি ও অপপ্রচার ছড়ানোর চেষ্টা করছে তাদেরকে আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হুশিয়ারি জানাচ্ছি। পাশাপাশি কোন ধরণের গুজবে কান না দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজ নিজ অবস্থানে সচেতন থাকতে সকলকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
এদিকে
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতিতে ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মো. ছিদ্দিকুল ইসলাম এক বিজ্ঞাপ্তিতে জানান
বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবীর প্রেক্ষিতে গত ১৪ আগস্ট ডিন কাউন্সিলের জ রুরী সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সবাই একমত হয়ে বিশ্ব বিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম অনতিবিলম্বে শুরু করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অধিকাংশ পদ হতে (পরিচালক, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা, প্রক্টর, প্রভোস্ট, সহকারী প্রভোস্ট ইত্যাদি) শিক্ষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ পদত্যাগ করায় প্রশাসনিক কার্যক্রম ও ছাত্রদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে বিধায় ১৮ আগস্ট হতে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব নয়।

এখানে উল্লেখ্য যে, অজ্ঞাত স্থান হতে ভাইস চ্যান্সেলর স্বাক্ষরিত একটি অফিস আদেশ একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেয়া হয়েছে, যা আমার নিকট সত্য বলে মনে হয়নি। কারণ, ১৮ আগস্ট একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে গেলে নিয়মানুযায়ী ডিন কাউন্সিলের সাথে অবশ্যই পরামর্শ করার প্রয়োজন ছিল, যা তিনি করেননি। উনার ছুটিকালীন সময় আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব ১৫ আগস্ট অতিক্রান্ত হওয়ার পরও উনি আমার সহিত কোন প্রকার যোগাযোগ করেননি। তাই এই অফিস আদেশটি অন্য কোন মহল হতে অনলাইনে প্রেরণ করে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা করছে বলে আমি মনে করি।

[hupso]